ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
গর্ভকালীন খাবার

গর্ভকালীন অবসাদ কাটায় যেসব খাবার

20Fours Desk | আপডেট : ২৯ জুন, ২০১৯ ১৩:৪৮
গর্ভকালীন অবসাদ কাটায় যেসব খাবার

গর্ভকালীন সময় সুস্থ থাকা খুবই প্রয়োজন। তাছাড়া গর্ভকালীন সময়ে নারীদের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
গর্ভাবস্থায় কোন খাবারগুলো মায়ের জন্য উপকারী আর কোনগুলো সমস্যার কারণ হতে পারে তা জানা জরুরি। তবে এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে গর্ভকালীন সময়ে অবসাদ ঘটে।

চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গর্ভকালীন অবসাদ কাটায় কোন কোন খাবারঃ

দুগ্ধজাত খাবারঃ গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরের পুষ্টি চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। এসময় বেশি পরিমাণে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা উচিত যাতে গর্ভের বাড়ন্ত ভ্রণের চাহিদা মেটে। দুগ্ধজাত খাবারে দুই ধরনের প্রোটিন থাকে, ‘ক্যাসেইন’ আর ‘হোয়ে’। পাশাপাশি ক্যালসিয়ামের চমৎকার উৎস এই দুগ্ধজাত খাবার, সঙ্গে থাকে উচ্চমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা, ফসফরাস এবং কয়েক ধরনের ভিটামিন বি যেমন, ‘থিয়ামিন’, ‘রিবোফ্লাভিন’, ‘ভিটামিন বি টুয়েলভ’। এদের সবগুলোই ভ্রণের বিকাশের জন্য জরুরি।

ডাল ও শুঁটি-জাতীয় খাবারঃ মশুর ডাল, সিম, মটরশুঁটি, সয়াবিন, বাদাম ও ছোলা- এই ধরনের খাবার উদ্ভিজ্জ আঁশ, ‘ফোলেট (ভিটামিন বি নাইন)’, প্রোটিন, লৌহ এবং ক্যালসিয়ামের আদর্শ উৎস। এই সবগুলো পুষ্টি উপাদান গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মায়ের প্রয়োজন। ‘ফোলেট(ভিটামিন বি নাইন)’ মা ও ভ্রণের সুস্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয়, বিশেষ করে প্রথম তিন মাস। পর্যাপ্ত ‘ফোলেট’ গ্রহণ না করলে গর্ভের শিশুর ‘নিউরাল টিউব’ সঠিকভাবে গড়ে না ওঠার এবং জন্মের সময় ওজন কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার পর্যাপ্ত দস্তার অভাবে অপরিণত সন্তান প্রসবের আশঙ্কা বাড়ে।

ব্রকলিঃ গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় অনেকগুলো পুষ্টি ‍উপাদান মেলে ব্রকলিতে। এরমধ্যে আঁশ, ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাসিয়াম, লৌহ, ‘ফোলেট’, অন্যতম। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও প্রচুর পরিমাণে থাকে এতে। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য উপকারী উদ্ভিজ্জ উপাদানও মেলে এই সবজি থেকে। আঁশ বেশি থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে বেশ উপকারী ব্রকলি, যা গর্ভবতি মায়েদের একটি সাধারণ সমস্যা। তাই সালাদ, সুপ, তরকারি ইত্যাদিতে ব্রকলি রাখা উচিত।

অ্যাভোকাডোঃ আমাদের দেশে তেমন একটা সহজলভ্য না হলেও ‘মনো আনস্যাচুরেইটেড ফ্যাটি অ্যাসিড’য়ে টইটম্বুর এই ফল। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও আছে আঁশ, কয়েক ধরনের ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে এবং কর্পূর। বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর চর্বি, ‘ফোলেট’ আর পটাসিয়ামের কারণে গর্ভবতী মায়ের জন্য অ্যাভোকাডো আদর্শ একটি খাবার। স্বাস্থ্যকর চর্বি গড়ে তোলে ভ্রণের ত্বক, মস্তিষ্ক এবং টিস্যু। ‘ফোলেট’ সাহায্য করে ‘নিউরাল টিউব’য়ের সমস্যা সারাতে। পটাসিয়াম মাকে সুরক্ষা দেয় পায়ের ব্যথা বা খিঁচুনি থেকে।

বাদাম ও বীজঃ সহজ এবং স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবে বাদামের তুলনা হয় না। সব ধরনের বাদাম খেতে পারেন কারণ, সবগুলোতেই আছে ম্যাগনেসিয়াম, লৌহ, কর্পূর, সেলেনিয়াম এবং দস্তা। পেস্তা, কাঠবাদাম ও কাজুবাদামে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা গর্ভের শিশুর বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আলুবোখারা, খেজুর ইত্যাদি শুকনা ফলও উপকারী। আলুবোখারাতে আছে আঁশ, পটাসিয়াম, ভিটামিন কে এবং ‘সরবিটল’, যা গর্ভকালীন বিভিন্ন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা করে। আলুবোখার একটি প্রাকৃতিক ‘ল্যাক্সেটিভ’, যা কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে উপকারী। খেজুরে থাকে আঁশ, পটাসিয়াম ও লৌহ। তিল, কুমড়ার বীজ, শিয়া বীজ ইত্যাদি গর্ভবতী মাকে যোগাবে শক্তি এবং স্বাস্থ্যকর প্রসবের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ‍উপাদান।

বিটরুটঃ  ‘ফোলিক’ অ্যাসিড প্রচুর পরিমাণে মেলে বিটরুটে। গর্ভের সন্তানের টিস্যু এবং ‘স্পাইনাল কর্ড’ গড়ে ওঠার জন্য এই উপাদান প্রয়োজন। ফালি করে কিংবা শরবত বানিয়ে বিটরুট গ্রহণ করলে ‘স্পিনা বিফিডা’ বা এমন ধরনের অন্যান্য প্রসব জটিলতা থেকে সুরক্ষা মিলবে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও থাকে প্রচুর এই সবজিতে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য জরুরি। এছাড়াও বিটরুটে আছে ‘বেলাটিন’, যা একটি শক্তিশালী প্রদাহনাশক উপাদান। কর্মশক্তি বাড়াতেও সহায়ক বিটরুট। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে এটি যা সন্তান প্রসব সহজ করে।

উপরে