ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

ঘুরে আসুন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

20Fours Desk | আপডেট : ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০৯:৩১
ঘুরে আসুন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

যান্ত্রিক এই জীবনে আমাদের দম ফেলারও সময় নেই। সকাল থেকে রাত অবধি ছুটে চলা। তাই একটু সময় পেলেই অনেকেই কাছের কোথায় থেকে ঘুরে আসতে বেড়িয়ে পড়েন। এতে যেমন আমাদের একঘেয়ামিতা কেটে যায় তেমনি নতুন করে কাজ করার উদ্দাম ফিররে আসে। কিন্তু এখন কথা যারা রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছেন তারা কাছে কোথায় ঘুরতে যাবেন। ঢাকার আশে পাশে ঘুরে বাড়ানো যেসব জায়গা রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হল বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক অসম্ভব সুন্দর একটি জায়গা। এখানে যেমন আছে সবুজ প্রকৃতি তেমনি নানা ধরনের পশুপাখি। যা নিমিষেই আমাদের মন ভালো করে দিবে।

ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় মাওনা ইউনিয়নে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কটি অবস্থিত। ভাওয়াল গড়ের ছোট ছোট টিলা ও নিচু এবং সমভূমি নিয়ে বিশাল শালবনে তৈরি করা হয়েছে এই সাফারি পার্ক। ৪৯০৯ একর বনভূমিতে গড়ে উঠা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এশিয়ার বৃহত্তম পার্ক। ঢাকার খুব কাছে হওয়ার পুরো পরিবার নিয়ে দিনে যেয়ে দিনেই ফেরা যায়।ঢাকা থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৪০ কি.মি.।

জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এই স্থানটি সব সময়ই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। পার্কে ১২২৫ একর জায়গা নিয়ে স্থাপন করা হয়েছে কোর সাফারি, ৫৬৬ একর জায়গা নিয়ে সাফারি কিংডম, ৮২০ একর জায়গা নিয়ে বায়োডাইভার্সিটি, ৭৬৯ একর এলাকা নিয়ে এক্সটেন্সিভ এশিয়ান সাফারি এবং ৩৮ একর এলাকা নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার। পার্কে বন ও অবমুক্ত প্রাণির নিরাপত্তার জন্য ২৬ কিলোমিটার বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটক গাড়িতে বসে বিচরণ অবস্থায় বন্যপ্রাণী দেখতে পারবেন।

পার্কে অবমুক্ত করা হয়েছে বাঘ, সিংহ, ভালুক চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, জেব্রা, জিরাফ, ওয়াইল্ডবিষ্ট, ব্লেসবক, উটপাখি, ইমু প্রভৃতি।পুরো পার্ক উপর থেকে দেখার জন্য রয়েছে পর্যবেক্ষন কেন্দ্র।  এখানের সবথেকে দারুন বিষয় হলো এখানে আপনি থাকবেন খাঁচার মধ্যে আর বাঘ, সিংহরা আপনার চারপাশে ঘুরে বেড়াবে এমন একটা অনুভূতি পাবেন।বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে সাজানো বাগানে নানা রঙয়ের ফুল আপনাকে মুগ্ধ করবে। ফুলের বাগানের পাশাপাশি পার্কের শাল-গজারির সবুজে আবৃত পুরো পার্ক এবং বিভিন্ন বেষ্টনীতে থাকা দেশি-বিদেশি পশু-পাখি যেকাউকে মুগ্ধ করে।এছাড়াও এখানে আছে ম্যাকাও ল্যান্ড। যেখানে নীল-সোনালি ম্যাকাও, সবুজ ম্যাকাও, আফ্রিকান গ্রে প্যারট, টিয়া, পেলিকেন, লুটিনো রিংনেক প্যারটসহ প্রায় ৩৪ প্রজাতির পাখি। সবগুলোই আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছে। ম্যাকাও ল্যান্ডের পাশেই মেরিন অ্যাকুরিয়াম। রয়েছে প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ। ক্রোকোডিল ফিস, টাইগার ফিস, লুকিয়ে থাকা ব্ল্যাক গোস, অস্কার। রয়েছে চিকলেট মাছ যা ২০ সেকেন্ড পর পর রং পরিবর্তন করে। এছাড়াও রয়েছে প্রজাপতি সাফারি। যেখানে প্রায় ২৬ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে। সাফারি কিংডমে রয়েছে প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, ফ্যান্সি কার্প গার্ডেন, জিরাফ ফিডিং স্পট, আইল্যান্ড, বোটিং ও লেক জোন।

এ পার্কে প্রবেশ করতে বয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ২০ টাকা প্রবেশ ফি দিতে হবে। এছাড়াও গাড়িতে সাফারি পার্ক পরিদর্শন করতে হলে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লাগবে ৫০ টাকা, বড়দের ১০০ টাকা।এখানে খাবারের জন্য আছে দুটি বিশাল আকার পর্যবেক্ষণ রেস্তোরা। একটি টাইগার রেস্তোরা এবং অপরটি সিংহ পর্যবেক্ষণ রেস্তোরা। এই দুটো রেস্টুরেন্টে বসেই কাচের মধ্যে দিয়ে সিংহ এবং বাঘ দেখতে দেখতে খাওয়াদাওয়া করা যাবে।

উপরে