ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
বিছুটি উদ্ভিদের উপকারিতা

বিছুটি উদ্ভিদের উপকারিতা

20Fours Desk | আপডেট : ২৪ অক্টোবর, ২০১৮ ১৬:৩৫
বিছুটি উদ্ভিদের উপকারিতা

বিছুটি( Common Nettle)একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Urtica dioica। এটি একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট হয়ে থাকে। এটি একটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ।তবুও কখনো কখনো এক বছরের বেশি বেঁচে থাকে। গাছটি লাল রঙের।এর পাতা কান্ড,শাখা-প্রশাখা ও পাতার শিরা-উপশিরা সবই লাল রঙের হয়ে থাকে। সমগ্র উদ্ভিদটির গায়ে অতি ক্ষুদ্র রোমের মত কাঁটা থাকে যা শরীরের স্পর্শে এলে ভীষণ চুলকায়।এজন্যই এর নাম বিছুটি। এদের পাতা আয়তাকার,অনেকটা পান পাতার মত, ৩-৫ সেমি লম্বা, খসখসে। লম্বা মঞ্জুরীতে সবুজ রঙের ফুল গুচ্ছে গুচ্ছে জন্মে। গাছটির শিকড়, রাইজোম এবং পাতার রস ঔষুধের কাজে লাগে। এর আদি নিবাস রাশিয়া হলেও এটি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফ্রিকা মহাদেশসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশে এর দেখা পাওয়া যায়। নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতে এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, তবে শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না। আসুন আজ জেনে নিই বিছুটি উদ্ভিদের উপকারীতা সম্পর্কে।

রাসায়ানিক উপাদানঃ

বিছুটি গাছের শিকড় শিকড়, রাইজোম এবং পাতার রস ঔষধি গুণ সম্পূর্ণ। এতে আছে ট্যানিন; ফাইবার; ক্লোরোফিল রাসায়নিক উপাদান। এ ট্যানিন; ফাইবার; ক্লোরোফিল; বেরিয়াম, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম সেইসাথে লোহা, বোরন, মলিবডিনাম, স্ট্রনটিয়াম, সেলেনিয়াম, তামা, ম্যাঙ্গানিজ, টাইটানিয়াম, নিকেল ও অ্যাসকরবিক বিদ্যমান। এর পাতায় যে পরিমাণ ভিটামিন সি আছে তা ১০ গ্রাম কিশমিশের সমান বা একটি গাজরের অর্ধেক। যা নানাভাবে আমাদের অনেক উপকার করে থাকে।

উপকারীতাঃ

১। বিছুটি পাতা ব্যাথা নাশক। এর এণ্টিসেপটিক উপাদান শরীরের যেকোন অংশের ব্যাথা কমাতে দারূন কাজ করে।এজন্য শুকনো পাতার গুঁড়া ভীষন কাজ করে। একই সাথে এটি রক্তাল্পতা, ফুসফুস এবং অন্ত্রের অভ্যন্তরীণ রক্ত ক্ষরণ কমায়। এই উদ্ভিদের নির্যাস জরায়ুর রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করে এবং স্ত্রীরোগে ভীষণ কাজ করে।

২। অনবরত হাঁচি দেয়ার সমস্যায় বিছুটি গাছ অত্যান্ত উপকারী। এজন্য ফুটন্ত পানিতে বিছুটি পাতা দিয়ে চা তৈরি করুন এবং দিনে ২-৩ বার এই চা পান করুন। এতে থাকা অ্যাসট্রিনজেন্ট একজিমা, পোকার কামড়, পক্স কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন চর্মরোগে ওষুধ হিসেবে বিছুটি পাতার তেল বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর শিকড়ের রস মূত্রবর্ধক এবং রক্তপরিষ্কারক।

৩। এর তেল আমাদের চুল পড়া কমায়। রেগুলার হেয়ার অয়েলের সাথে বিছুটি পাতার তেল মিশিয়ে স্কাল্পে ম্যাসাজ করলে চুল পড়া অনেক কমে যায়। একই সাথে ই পাতার মধ্যে থাকা সিলিকন ও সালফার চুল ঘন করতে এক এবং অদ্বিতীয়। চুলের জেল্লা বাড়াতে চাইলে এক মগ জলে এই পাতা ফুটিয়ে, ছেঁকে, ঠান্ডা করে শ্যাম্পু করার পর মাথায় ঢেলে নিন।

৪। বিছুটি পাতার রস কিংবা তেল হালকা কুসুম গরম করলে মালিশ করলে বাতের ব্যাথা এবং হাড়ের জয়েন্টের ব্যাথা খুব দ্রুত কমায়। একই সাথে এই গাছের শিকড় এবং চিনি একসাথে জ্বাল করে খেলে সর্দি-কাঁশি ভালো হয় এবং ক্রনিক হেপাটাইটিস, গ্যাস্ট্রিক আলসার ভালো হয়। একই সাথে এটি পিত্ত থলি এবং যকৃতের বিভিন্ন রোগ ভালো করে।

৫। ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর করতে বিছুটি পাতা অনেক কার্যকরী। এজন্য বিছুটি পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর এই পেস্ট হালকা কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখুন।খুব তাড়াতাড়ি ব্রণের প্রকোপ কমে আসবে। এছাড়াও অয়েলি ত্বকের জন্য এটি ভীষণ উপকারী।

উপরে