ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
ডাবের শাঁস

ডাবের শাঁসের উপকারীতাগুলো জানেন তো?

20Fours Desk | আপডেট : ১১ অক্টোবর, ২০১৮ ০৯:৩৫
ডাবের শাঁসের উপকারীতাগুলো জানেন তো?

ডাব আমাদের সকলের পরিচিত একটি ফল। ডাবের পানি আমরা সবাই খেয়ে থাকি। এটি অনেক উপকারী। আর এই ডাব একটি পরিপক্ক হলে এর ভেতরে পাওয়া যায় শাঁস। আমরা অনেকেই এই শাঁস খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি এই কচি ডাবের শাঁস আমাদের কতটা উপকার করতে পারে? আসলে ডাব একটু পরিপক্ক হয়ে গেলে এর ভেতরে শাঁস তৈরি হয়ে থাকে । এই শাঁস পাতলা এবং সাদা রঙের হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটা দুধের সরের মত। এটি খেতেও অনেক মজাদার। আসুন জেনে নিই ডাবের শাঁসের পুষ্টিগুণ এবং উপকারীতা সম্পর্কে।

পুষ্টিগুণঃ

কচি ডাবের শাঁসে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, বি৯, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইট্রেড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, পটাশিয়াম, ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার,ম্যাঙ্গানিজ এবং প্রচু পরিমাণে ক্যালরি থাকে। এতে থাকা এসব উপকারী উপাদান আমদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে।

উপকারীতাঃ

১। কচি ডাবের শাঁস আমাদের রক্তে গ্লুকোজ এবং ইনসুলিন সিক্রেসন উন্নত করে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনকে ভালোভাবে প্রভাবিত করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং আস্তে আস্তে রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে আনে ডাবের শাঁস। এছাড়াও এতে থাকা পটাশিয়াম আমাদের শরীরে কোষে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং  হৃদযন্ত্রের সক্রিয়তা ও মাংশপেশীর গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখে। একই সাথে এতে থাকা কপার আমাদের রেড ব্লাড সেল উৎপাদনে এবং আমাদের স্বাদ অনুভূতি ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

২। ডাবের শাঁসে আছে ফাঈবার।  প্রতি ১০০ গ্রাম ডাবের শাঁসে প্রায় ৭.২ গ্রাম ফাইবার থাকে।  আর এই  ফাইবার আমাদের খাবার হজম করতে সাহায্য করে। একই সাথে এটি আমাদের কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের মত সমস্যা কমিয়ে থাকে। একই সাথে ডাবের শাঁস খেলে আমাদের পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকে। ফলে বার বার ক্ষুধা লাগে না। তাই অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা একদম হ্রাস পায়।এছাড়াও পেটের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমাতে ডাবের শাঁসের তুলনা নেই।

৩। ডাবের শাঁসে আছে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ।যা আমাদের হাড়ের সুস্বাস্থ্যে সাহায্য করে। এটি আমাদের শরীরের হাড়কে পাতলা ও ভঙ্গুর হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং অস্টিওপোরোসিস রোগ প্রতিরোধ করে। এছারাও এটি আমাদের শরীরে ল্যাকটোজের ঘাটতি পূরণ করে। ডাবের শাঁস সঠিক ব্লাড সার্কুলেশন আমাদের ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং ত্বক সুন্দর রাখে। এতে থাকা অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও  অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আমাদের মাথার ত্বকের চুলকানি, ইনফেকশন দূর করে। একইসাথে এটি আমাদের মাথার ত্বক সুস্থ রেখে এটি চুলের গ্রোথ বাড়ায়।

৪। ডাবের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে লিউরিক অ্যাসিড থাকায় এটি হবু মায়ের স্তনে দুধের সঞ্চালন বাড়ায় এবং গর্ভকালীন সময়ে হবু মায়ের হাড়ের জয়েন্ট পেইন কমায়।এছাড়াও এতে উচ্চমাত্রায় মনোগ্লিসারাইড উপাদান থাকায় এটি আমাদের শক্তি বর্ধকের কাজ করে এবং এটি আমাদের হৃদযন্ত্রের জন্য অনেক উপকারী।এর অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক উপাদান আমাদের শরীরে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে।

৫। আয়রনের অন্যতম প্রাকৃতিক একটি উৎস হলো ডাবের শাঁস।মাত্র ১০০ গ্রাম ডাবের শাঁস আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রনের প্রায় ৬ শতাংশ পূরণ করতে পারে। যা কি না অন্যান্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের থেকে অনেক বেশি। আয়রন আমাদের শরীরের মাংসপেশীতে রক্ত চলাচল ঠিক রাখে এবং আমাদের দেহ গঠনে সাহায্য করে।

৬। ডাবের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন আর খনিজের উপস্থিতি থাকায় এটি আমাদের খাবার খুব দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে।এছাড়াও এটি আমাদের ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ায় এবং শরীরের কোষগুলোতে সঠিকভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে।

উপরে