ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
টক দই

সাধারণ টক দইয়ের অসাধারণ গুণ

20fours Desk | আপডেট : ৬ অক্টোবর, ২০১৮ ১৬:১৮
সাধারণ টক দইয়ের অসাধারণ গুণ

বর্তমান সময়ে নিজেদের সুস্থ্য রাখা একটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ চারদিকে এত ভেজাল যে বিশুদ্ধ কোনো কিছু পাওয়াই মুশকিল। আর এত ভেজাল খেয়ে আমাদের স্বাস্থ্যের বারোটা বেজে যায়।আর এজন্য সুস্থ্য থাকতে আমরা কত কিছুই না করে থাকি, কত কিছুই না খেয়ে থাকি। কিন্তু খুবই সাধারন এবং ঘরোয়া কিছু খাবার আমাদের শরীরকে অনেক ভালো রাখতে পারে তা হয়তো আমরা অনেকেই ভাবতেই পারি না। এই যেমন টক দই। খুবই সাধারন এবং খুব সহজেই বাসায়ই তৈরি করা যায় এটি। অথচ এই সাধারণ খাবারটি আমাদের শরীরের জন্য যে কতটা উপকারী তা আমরা অনেকেই জানি না। আসুন তবে আজ নিই টই দইয়ের পুষ্টিগুণ এবং নিয়মিত তক দই খেলে আমাদের কী কী উপকার হতে পারে তা সম্পর্কে।

পুষ্টিগুণঃ

টক দই অত্যান্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। দেখতে খুবই সাধারণ হলে পুষ্টিগুণে এটি মোটেও সাধারণ নয়। দেখা গেছে প্রতি ১০০ গ্রাম দইয়ে প্রায় ক্যালসিয়াম ১৫০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ  ১০২ আইইউ, প্রোটিন ৩ গ্রাম, ফ্যাট ৪ গ্রাম, ময়েশ্চার ৯০ গ্রাম, ক্যালরি ভ্যালু ৬০ কিলো ক্যালরি। এছাড়াও টক দইয়ে আছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, উপকারী ব্যাক্টেরিয়া, অ্যামিনো এসিড ও ভিটামিন ডি।

উপকারীতাঃ

১। টক দইয়ে আছে ল্যাকটোব্যাসিলাস অ্যাসিডোফিলাস নামের একটি ব্যাকটেরিয়া।যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ক্ষতিকর জীবাণুদের মেরে ফেলে। ফলে ভেজাইনাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। এছাড়াও এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অনেক শক্তিশালী করে তোলে। ফলে যেকোন সংক্রমণ বা ভাইরাল ফিবার থেকে থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।এছাড়াও এতে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্কের মতো উপকারি সব উপাদান। তাই নিয়মিত টক দই খেলে শরীরে নানারকম মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের ঘাটতি পূরণ হয়।

২। টক দই খেলে আমাদের রক্তে মিশে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল কমে যায় এবং এটি ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে বিভিন্ন হার্ট ডিজিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।এতে থাকা পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মত উপকারী খনিজ উপাদান আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের রক্তনালীর সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।তাই নিয়মিত টক দই খেলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।

৩। টক দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং স্ট্রেপটোকক্কাস থ্রেমোফিলাস নামের দুটি ব্যাকটেরিয়া আমাদের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এই দুটি ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের টিউমার বা ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে।এছাড়াও এমন অনেকই আছেন যারা গন্ধ বা বমি লাগার কারণে দুধ খেতে পারেন এই ধরনের সমস্যাকে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স বলা দুধ থেকে দই হওয়ার সময় ল্যাকটোজ, ল্যাকটিক অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয়ে যায়। তাই দই খেলে এসব সমস্যা হয় না। তাই এটি দুধের বিকল্প হিসেবে নিয়মিত খেতে পারেন।

৪। টক দইয়ে এমন কিছু উপাদান আছে যা আমাদের পাকস্থলিতে হজমে সহায়ক  ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে। ফলে খাবার সঠিকভাবে হজম হয়।তাই বদ-হজম এবং গ্যাসের মত সমস্যা একদম কমে যায়।এছাড়াও পেপটিক আলসারের জন্য দায়ী এইচ পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে টক দই। তাই নিয়মিত টক দই খেলে পেপটিক আলসারের সমস্যা একদম কমে যায়।

৫। টক দই খেলে আমাদের শরীরে পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং আয়োডিনের ঘাটতি দূর হয়। একই সাথে  ভিটামিন বি৫ এবং বি১২-এর মাত্রা বাড়তে থাকে।ভিটামিন বি১২ আমাদের রক্তে লোহিত  কণিকার উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের নার্ভাস সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও তক দই খেলে আমাদের মানসিক চাপ এবং অ্যাংজাইটি কমতে শুরু করে।

৬। নিয়মিত এক বাটি করে দই খাওয়া শুরু করলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, সেই সঙ্গে কর্টিজল হরমোনের ক্ষরণও কমে যায়। ফলে ওজন হ্রাসের সম্ভাবনা প্রায় ২২ শতাংশ বেড়ে যায়।বিশেষত ভুঁড়ি কমাতে দইয়ের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।একই সাথে এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম আমাদের দাঁত এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

উপরে