ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
কাঁচা পেঁয়াজ

পেঁয়াজ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

| আপডেট : ১৩ নভেম্বর, ২০১৭ ১৬:১৩
পেঁয়াজ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

একটি বড় মাপের পেঁয়াজে ৮৬.৮ শতাংশ পানি, ১.২ শতাংশ প্রোটিন, ১১.৬ শতাংশ শর্করা জাতীয় পদার্থ, ০.১৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ০.০৪ শতাংশ ফসফরাস ও ০.৭ শতাংশ লোহা থাকে। এছাড়া পেঁয়াজে ভিটামিন এ, বি ও সি থাকে। আমাদের দেশে রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার হয় অহরহ। কিন্তু এটি সরাসরি তরকারি হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে এবং তা হতে পারে শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর। একইসঙ্গে এটি কমাতে পারে আপনার শরীরের বাড়তি ওজনও।


পেঁয়াজের এ উপকারিতার জন্য সেই খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ সালের দিকে মিশরীয়রা এর ভক্ত ছিল। খুব জনপ্রিয় ছিল সে সময় তরকারি হিসেবে পেঁয়াজ। গবেষকরা তাই বলেন। পেঁয়াজে আছে উচ্চমানের সালফার যৌগ। আর এর কারণেই পেঁয়াজ কাটলে নাকে লাগে ঝাঁঝালো গন্ধ। চোখে পানি চলে আসে। তবে এটি আবার উপকারেও লাগে। গবেষকরা বলছেন, পেঁয়াজ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে উচ্চরক্তচাপের রোগীরা নিয়মিত পেঁয়াজ সমৃদ্ধ তরকারি বা পেঁয়াজের তরকারি খেলে উপকার পাবেন। শুধু তাই নয়, পেঁয়াজ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমায়। অতএব যারা পেঁয়াজ খান তারা খানিকটা চিন্তামুক্ত থাকতে পারেন। আরো চমকে যাওয়ার মতো তথ্য হলো, পেঁয়াজ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পেঁয়াজের মধ্যে আছে ফাইটোকেমিক্যাল এবং ফ্লাবোনয়েড কোয়েরসেটিন। এ দুটো উপাদান ক্যান্সার কোষের অনিয়ন্ত্রিত গ্রোথ কন্ট্রোল করতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন। শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর ২০ ভাগ মেটানো সম্ভব একটা পেঁয়াজ থেকেই।

পেঁয়াজের কিছু গুণাগুণ

    ঠাণ্ডা লেগে মাথাব্যথা হলে ১ চামচ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে দ্বিগুণ পানি মিশিয়ে একবার খেলে ব্যথা কমে যাবে।
    জ্বর জ্বর ভাব হলে পেঁয়াজের রস নাক দিয়ে টেনে নিলে জ্বর জ্বর ভাব চলে যাবে।
    বারবার বমি হলে চার-পাঁচ ফোঁটা পেঁয়াজের রস পানিতে মিশিয়ে সে পানি খেলে বমি হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
    হেঁচকি উঠলে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পানি খেলে হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়ে যাবে।
    পেঁয়াজ খেলে শরীরের অতিরিক্ত ইউরিক এসিড বের হয়ে যায়।
    পেঁয়াজের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বা ব্যাকটেরিয়া নামক গুণাগুণ রয়েছে। তাই ফোঁড়া বা ঘা হলে তা পেঁয়াজের রস দিয়ে ধুলে তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
    চুল ধোয়ার আগে মাথায় আধঘণ্টা পেঁয়াজের রস মেখে রাখলে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।

এবার জানুন কিভাবে রোগ সারাবে পেঁয়াজ

বুকে ইনফেকশন: পেঁয়াজ কুচিয়ে নিয়ে ১-২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই পেস্ট বুকে লাগিয়ে তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন। ইনফেকশন কমে যাবে।
কাটা-ছেঁড়া: পাতলা করে পেঁয়াজের সাদা ফিল্ম কেটে নিয়ে কাটার ওপর লাগিয়ে গজ দিয়ে বেঁধে রাখুন। রক্ত পড়া সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে।
জ্বর: জ্বর কিছুতেই কমছে না? পায়ের তলায় নারকেল তেল মালিশ করে পেঁয়াজের স্লাইস রেখে মোজা পরে থাকুন। জ্বর কমে যাবে।
কাশি: পেঁয়াজ অর্ধেক করে কেটে নিন। দুটো আধা ভাগের ওপর এক টেবল চামচ করে ব্রাউন
সুগার দিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। দিনে দু’বার করে খেলে কাশি কমে যাবে।
কানের ব্যথা: পেঁয়াজ কুচিয়ে পাতলা কাপড়ে বেঁধে নিন। ব্যথা কানের কাছে কাপড় বেঁধে রাখুন।
শিশুদের পেটের সমস্যা: হলুদ পেঁয়াজ ডুমো করে কেটে জলে ফুটিয়ে অনিয়ন টি বানিয়ে নিন। শিশুদের এই চা খাওয়ালে সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে।
বমি: বার বার বমি হচ্ছে? পেঁয়াজ বেটে রস তৈরি করে নিন। সঙ্গে বানিয়ে রাখুন পেপারমিন্ট টি। দু’চা চামচ পেঁয়াজের রস খেয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। এ বার দু’চা চামচ পেপারমিন্ট টি খান। এভাবে এক বার পেঁয়াজের রস, এক বার চা ১৫ মিনিট ধরে খেলে বমি কমে যাবে।

শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর ২০ ভাগ মেটানো সম্ভব একটা পেঁয়াজ থেকেই।
স্বাস্থ্য রক্ষায় পেঁয়াজের গুণাগুণ অনেক। আমাদের হাতের নাগালে থেকেও আমরা এর অনেক গুণ সম্পর্কে ভালো করে জানি না। পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণ সালফার থাকে। চিকিৎসকদের মতে, এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাংগাল গুণ সাধারণ সর্দি, কাশি থেকে হার্টের সমস্যাও দূরে রাখতে পারে। যাদের কাঁচা পেঁয়াজ খেতে ভাল না লাগে তারাও এর উপকার থেকে বঞ্চিত হবেন না।

 

উপরে