ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
শিশুপালন

যেসব খাবার শিশুকে দেওয়া বিপদজনক

যেসব খাবার শিশুকে দেওয়া বিপদজনক

একটি শিশু সুস্থ সবলভাবে বড় হওয়ার জন্য দরকার সঠিক ও পুষ্টিকর খাবারের। তাই শিশুর বৃদ্ধির ও সঠিক বুদ্ধির বিকাশের জন্য, যে খাবার দেওয়া হচ্ছে অবশ্যই তার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সন্তানকে খাওয়ানোর সময় বা অন্য কেউ কিছু খাওয়ানোর সময় অবশ্যই দেখবেন সেই খাবারগুলো শিশুর ওই বয়সের জন্য উপযুক্ত কি না, যদি উপযুক্ত হয়ও তা সঠিক আকৃতি বা অবস্থায় শিশুকে দেওয়া হচ্ছে কি না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু মজাদার খাবার বাচ্চারা সহজে হজম করতে পারে না। এসব খাবার তার বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।

শিশুর এক বছর হওয়ার আগে যেসব খাবার শিশুকে দেওয়া বিপদজনক তার একটি তালিকা এখানে দেখানো হল।

মধু : শিশু জন্মের পর পরই অভিভাবকরা তাকে মধু চাটতে দেন। কিন্তু বাচ্চারা ১ বছর না হওয়া পর্যন্ত এটা কোনভাবে দেয়া উচিত নয়। শিশুর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মধু তো দূরের কথা কোনও খাবার শিশুর মুখে দেয়া যাবে না। কারণ ১ বছর পর্যন্ত শিশুর বটুলিজম হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়, আর মধু এই ছত্রাক বহন করে।

চকলেট : শিশুদের সবচেয়ে প্রিয় খাবার চকলেট। তবে এতে ব্যবহার করা কোকো বাচ্চাদের হজম শক্তি নষ্ট করে এবং দাঁতের ক্ষতি করে। এ থেকে অনেক শিশুর অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। তাই যথাসম্ভাব চকলেট না দেওয়ায় ভাল আর ১বছরের আগে তো একদমই দেওয়া যাবে না।

লবণ : শিশুদের কিডনি লবণ ও সোডিয়াম সহ্য করতে পারে না। কারন লবনেই রয়েছে প্রচুর সোডিয়াম যা শিশুর পাকস্থলীতে খাবার পরিপাকে সমস্যার সৃষ্টি করে।  তাই শিশুর খাবারে লবণ না মেশানই ভালো। তবে ১ বছর পরে শিশুর খাবারে অল্প অল্প করে লবণ মেশাতে পারেন। কিন্তু ১বছরের আগে মোটেও শিশুর খাবার তৈরিতে লবণ ব্যবহার করা যাবে না।

চিনি : শিশুর খাবারে চিনি মেশানো ঠিক নয়, কারণ অতিরিক্ত চিনিতে শিশুর দাঁত ক্ষয় হতে পারে। তাই চিনির স্বাদ পেতে তাকে মিষ্টি জাতীয় ফল দিতে পারেন যেমন : কলা, মিষ্টি আম ইত্যাদি।

গরুর দুধ : শিশুর প্রথম বছরের আগে গরুর দুধ না দেয়াই ভালো। কারণ গরুর দুধে থাকে বেশি প্রোটিন এবং সোডিয়াম যা শিশুর ছোট পেটে তা পরিপাক করতে ব্যাঘাত ঘটায়। এছাড়া গরুর দুধে মায়ের দুধ ও ফর্মুলা দুধের থেকে কম আয়রন এবং অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড কম থাকে। কিন্তু আয়রন এবং ফ্যাটি এসিড শিশুর বৃদ্ধির জন্য অত্যাবশ্যক। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে যদি কম বয়সে গরুর দুধ দেয়া হয় তাহলে অ্যাসিডিটির ও অ্যালার্জির সৃষ্টি করতে পারে।

বাদাম : চিনাবাদাম বা এই ধরনের কিছু বাদাম অ্যালার্জির সৃষ্টি করে থাকে তাই সবচেয়ে ভালো হয় এসব খাবার শিশুর এক বছর বয়স হওয়ার আগে না দেয়া। আর যদি পরিবার কোন সদস্যের বাদামে অ্যালার্জি থাকে তাহলে বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করে দিতে হবে বা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে দিতে হবে।

ডিম : এই বয়সে ডিম কিছুটা অ্যালার্জি উৎপাদক খাবার। তবে সবার সমস্যা হবেই তা নয়। তাই পরিবারে যদি কারো ডিমে অ্যালার্জি থাকে সেক্ষেত্রে কিছুদিন অপেক্ষা করে দেয়াই উত্তম। যদি অ্যালার্জির কোন সমস্যা না থাকে তাহলে ডিম খেতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। তবে দিতে হবে ধীরে ধীরে।

চিংড়ী মাছ : সব বয়সের মানুষের বেশি অ্যালার্জি উৎপাদক খাবার হচ্ছে চিংড়ী মাছ। তাই শিশু কিছুটা বড় না হওয়া পর্যন্ত এই খাবারটি না দেয়াই ভালো।

কার্বোনেটেড ড্রিংকস : পেপসি, স্প্রাইট, কোক, সোডা পানি এসব কার্বোনেটেড ড্রিংকসে প্রচুর চিনি, সোডিয়াম এবং আর্টফিশিয়াল ফ্লেভার দেয়া থাকে যা শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এসব ড্রিংকসের গ্যাসের কারনে কার্বোনেশন ঘটে যা শিশুদের ছোট পাকস্থলীতে সমস্যার সৃষ্টি করে।

বড় ফল : ফল যেমন আঙ্গুর, বেরি ইত্যাদি ফলও যদি আস্ত দেয়া হয় শিশুরা কম দাঁত নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারবে না। তাই এসব ফল দিতে হলেও ছোট ছোট টুকরো করে কামড়ের আকারে দিতে হবে।

বড় ফল ও সবজির বড় টুকরো : এই বয়সে সবজির বড় টুকরো যেমন গাজর, শশা ইত্যাদির এবং ফলের বড় টুকরো যেমন আপেল, নাশপাতি ইত্যাদি দেয়া উচিত নয়। ভালভাবে রান্না করে ছোট টুকরো করে বা পিষে দিতে হবে।

কিসমিস : এই বয়সে তাদের কিসমিস খাওয়ানো ভালো নয়। কিছুটা বড় হওয়ার পর দিতে হবে। কারন কিসমিসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বিদ্যমান থাকে। যা ১ বছরের কম শিশু গ্রহণ করতে সক্ষম হয় না।

পপকর্ন : শিশুর এই বয়সে পপকর্ন খাওয়ানো বিপদজনক। কারন এটি তারা হজম করতে পারবে না।

উপরে