আমরা যারা স্বাভাবিক কাজ কর্মের মধ্যে থাকি তারা সব সময় ব্যায়ামের দিকে খুব একটা নজর দেই না। কিন্তু শরীরটা তো ঠিক রাখা চাই। তাই নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম একজন সুস্থ মানুষের খুবি জরুরি। শরীরে বাড়তি মেদ ঝরাতে আপনার সিদ্ধান্তই আসল। আপনি চাইলেই আপনার ওজন নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। শরীরে জমে থাকা বাড়তি মেদ ঝরাতে আপনাকে কী করতে হবে? পোড়াতে হবে ক্যালোরি। যত ক্যালোরি বাড়তি খাচ্ছেন প্রতিদিন, ততখানি ঝরিয়ে ফেলতে পারলেই বাড়বে না ওজন। আর একটু বেশি ঝরাতে পারলেই ওজন কমতে শুরু করবে। ওজন কমানো মানেই জিমে গিয়ে ব্যায়াম করা নয়, বরং নিজের দৈনন্দিন জীবনের ফাঁকেই একটু বুদ্ধি করলে ঝরিয়ে ফেলতে পারবেন বাড়তি মেদ।ব্যায়াম তো থাকছে তবে জোরাদার করতে হবে আপনার রোজকার খাদ্যাভাসে, সত্যি বলতে কী, বেশিরভাগ পুষ্টিবিদই মনে করেন যে আপনার শারীরিক সুস্থতার 80 শতাংশই নির্ভর করে ডায়েটের উপর।তাই আজকের লেখায় জানাবো ফিট থাকতে রোজকার খাদ্যতালিকা কোন খাবার গুলো যুক্ত রাখা জরুরি।
(১) আমাদের শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশই পানি, তাই পানি আমাদের খাদ্যতালিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হওয়া উচিত। পূর্ণবয়স্ক মানুষ স্বচ্ছন্দে দিনে পাঁচ লিটার পানি খেতে পারেন। বিশেষ করে অল্প উষ্ণ পানি ছোট ছোট সিপে বারবার খেতে পারলে আপনার শরীর ঝরঝরে থাকবে। কোষ্ঠকাঠিন্যজাতীয় কোনও সমস্যায় ভুগবেন না, পেট পরিষ্কার থাকবে।
(২) আপনি কী ধরনের জীবনযাত্রা নির্বাহ করেন, তার উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হবে রোজ ঠিক কতটা প্রোটিন আপনার দরকার। যাঁরা হেভি ওয়েট নিয়ে ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের প্রোটিন একটু বেশি লাগে। যাঁরা ওজন কমানোর বা এক জায়গায় ওজন ধরে রাখার চেষ্টা করছেন, তাঁদেরও একটু বেশি পরিমাণে প্রোটিন খাওয়া উচিত, কারণ প্রোটিন বেশিক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। আমিষ প্রোটিনের মধ্যে ডিম, মাছ, চিকেন খেতে পারেন। নিরামিষ প্রোটিনের মধ্যে আদর্শ হচ্ছে ডাল, ছোলা, রাজমা, সোয়াবিন, দুধ, দই, ছানা। খুব ভালো মানের প্রোটিন খাওয়ার অভ্যেস তৈরি করুন।
(৩) ভাত-রুটি খাদ্যতালিকা থেকে একেবারে বাদ দেওয়ার দরকার নেই, নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খান। খেতে পারেন ওটসও, ওটসে কার্বোহাইড্রেটের পাশাপাশি প্রোটিনও পাবেন। কার্বোহাইড্রেটের খুব ভালো উৎস হচ্ছে ফল। সমস্ত মরশুমি ফল খাদ্যতালিকায় রাখার চেষ্টা করুন, তাতে রোজের পাতে নানা রঙের সমাহারও দেখতে পাবেন। রঙিন ফল-সবজি আপনাকে অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের জোগানও দেবে। জটিল কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে শরীরের বেশি পরিশ্রম হয়।
(৪) আপনাকে রাফেজ জোগাবে শাকসবজি। প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, রাতের খাবার – সবেতেই কিছু না কিছু সবজি যেন থাকে তা দেখবেন। ভালো করে ধুয়ে নিয়ে সমস্ত মরশুমি সবজি ও শাকপাতা খাওয়া যায়। এমনকী আলুও বাদ দেওয়ার দরকার নেই। তবে একগাদা তেল-মশলা দিয়ে রান্না করবেন না, তাতে আনাজের পুষ্টিগুণ থাকে না। সেদ্ধ বা ভাপানো সবজি খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। রাফেজ আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে বেশিক্ষণ। সেই সঙ্গে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করতেও সাহায্য করবে।
এছাড়াও বাদাম, অ্যাভাকাডো, মাঠাযুক্ত দুধ, মাখন, ভালো মানের ঘি, নন-রিফাইন্ড তেল সবই আপনাকে ভালো ফ্যাটের জোগান দেবে। ফ্যাট খাদ্যতালিকা থেকে পুরোপুরি ছেঁটে ফেলাটা কোনও কাজের কথা নয়।