সজনের কাঁচা লম্বা ফল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, পাতা খাওয়া হয় শাক হিসেবে।সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। গবেষকরা সজেনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজেনা গাছকে বলা হয় মিরাক্কেল ট্রি।এটির শাক হিসেবে ব্যবহৃত পাতা ভিটামিন এ-এর এক বিশাল উৎস।
অন্যান্য শাকের মতো সজনে গাছের পাতাও শাক হিসেবে ভাজি করে খাওয়া যায়। বাংলাদেশের বেশ কিছু অঞ্চলে এ শাকের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।ভিটামিন এ থেকে শুরু করে প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম সবই আছে সজনে পাতায়। ১০০ গ্রাম সজনে পাতায় ১১৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন-ই থাকে। এই ভিটামিন সহনশক্তি বাড়ায়। সজনে পাতা খেলে হার্ট, আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের ব্যাপক শুশ্রূষা হয়।
নিয়ম করে সজনে পাতা খেলে রক্তশূন্যতা পুরোপুরি রুখে দেয়া সম্ভব। এটি বিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক করে সুগারের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে রাখে। এইচআইভি আক্রান্তদের শরীরে প্রতিরোধী শক্তি বাড়ায় সজনে গাছের পাতা। ৩০ গ্রামের মতো কাঁচা সজনে পাতা বেটে খেলেই দিনে যতটা ভিটামিন সি একজন প্রাপ্তবয়স্কের দরকার, ততটাই মিলে যায়।
সজনে পাতা খেলে ব্লাড প্রেসার কমে। হার্ট, মস্তিষ্ক, এমনকি স্নায়ুতন্ত্রেরও শুশ্রূষা করে সজনে শাক। ১০০ গ্রাম সজনে পাতায় ৪৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম। যা হাড় এবং দাঁতকে পোক্ত করে।
সজনে শাকের ৪০ শতাংশই প্রোটিন। হাড় বৃদ্ধিকালে কোনও শিশুর জন্য যতটা প্রোটিন দরকার, তার ৫০ শতাংশ মেলে ১০০ গ্রাম সজনে শাক দিয়ে তৈরি ঝোল খেলে।
এতে আছে ভিটামিন বি-টু যা শরীরে শক্তি তৈরিতে ভূমিকা রাখে। মুখের ঘা, দুর্গন্ধ দূর করতে প্রতিদিন ১০-১২টা করে সজনে পাতা চিবোন। সজনে পাতায় লুটিন নামে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। এটি চোখের সংবেদনশীল অংশের ক্ষতি আটকাতে সাহায্য করে। ১০০ গ্রাম সজনে পাতায় এই লুটিন থাকে ৭০ মিলিগ্রাম। একজন প্রাপ্তবয়স্কের দিনে দরকার মাত্র ৫ থেকে ১০ মিলিগ্রাম।
ডায়ারিয়া, কলেরা, আমাশয়, কোলাইটিস এবং জন্ডিসের সময় ব্যাপক শুশ্রূষাকারী সজনে পাতার ঝোল। কাঁচা পাতার রস খেতে পারলে তো কথাই নেই। যদি কাচা খেতে না পারেন তাহলে দু’তিন ফোঁটা মধু ফেলে তাজা এক গ্লাস ডাবের জলে মিশিয়ে খেতে পারেন।
এছাড়াও সজনে পাতায় থাকা বিটা-সিটোস্টেরল আলসারের শুশ্রূষা করে। খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়।সজনের পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি আছে। এতসব পুষ্টিগুণ একসাথে আছে বলেই এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারনের পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়।