বাচ্চাকে জিনিয়াস ভাবে দেখতে সব বাবা- মা চান। কিন্তু সব বাচ্চাই সমান প্রতিভা নিয়ে জন্মাবে এমন কোন কথা নেই। কিন্তু যাদের প্রতিভা আছে তাদেরকে জিনিয়াস হিসেবে গড়ে তুলতে কিছু কৌশল জানতে হবে। তাই অল্প বয়সে আপনার শিশুর বুদ্ধিমত্তা শাণিত করার দিকে নজর দিতে হবে।
এমনকি শিক্ষাবিদরা অনেকবার সাবধান করেছেন, "শিশুদের জবরদস্তি বা জোর করে প্রতিভাবান করে গড়ে তোলার চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হয়। তাদের নানারকম সামাজিক এবং মানসিক সমস্যা তৈরি হয়।"তাই বাচ্চাকে চাপে না ফেলে তাদের বুদ্ধি বিকাশে আমাদের কিছু কৌশল অবলম্বন করা উচিত।
জেনে নিন তাহলে বাচ্চাকে জিনিয়াস হিসেবে গড়ে তোলার ৮ টি কৌশলঃ
১৷ শিশুর প্রতিভা ও আগ্রহকে উৎসাহিত করাঃ
প্রত্যেক শিশু তার জন্মানোর সময় নিজস্ব কিছু প্রতিভা নিয়ে জন্মায়। যেমনঃ কেউ গান করতে, আর্ট করতে, খেলাধুলা করতে এসব নিয়ে আপনার শিশুর আগ্রহ থাকলে তাকে উৎসাহ দিন। এতে আপনার শিশু যেমন উৎসাহিত হবে। তেমনি তার প্রতিভা বাড়বে। মনে রাখতে হবে আপনার কোন সিদ্ধান্ত তাদের ওপর চাপ তৈরি করা হিতে বিপরীত হবে। সে যা নয়, তা বানানোর চেষ্টা করলে ক্ষতি ছাড়া লাভ হবেনা।
২। বাচ্চার বুদ্ধিবৃত্তিক এবং আবেগের চাহিদাকে সাহায্য করতে হবেঃ
একটি শিশু ছোট থেকে বড় হওয়ার সাথে সাথে তার অনেক প্রশ্ন জাগে মনে। আর এসব উওর আপনাদের ধৈর্য ধরে দিতে হবে। কারন এটা বুদ্ধি বিকাশের জন্য খুবই জরুরী।
৩। শিশুকে নানা ধরণের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করুনঃ
বুদ্ধিমান শিশুদের উদ্বুদ্ধ রাখতে, আগ্রহী রাখতে তাদেরকে অভিনব সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করতে হয়। জীবনের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। সাহস বাড়ায়। এছাড়াও মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, দিনের পর দিন একইরকম গতানুগতিক জীবন আলস্য, স্থবিরতা ডেকে আনে।
৪। জানা বা শেখার চেষ্টার প্রশংসা করুন, তার ক্ষমতাকে নয়ঃ
আপনার শিশুর কোন কিছুর জানা বা শেখার জন্য চেষ্টা করলে সেটি ভূল হলেও প্রশংসা করুন। কারন একটি শিশুর শেখার উৎসাহই পরবর্তী জীবনে তাকে সাফল্যের দরজায় নিয়ে যাবে।
৫। ব্যর্থতা ভীতিকর কিছু নয়ঃ
শিশুরা ভূল করতেই পারে বা কোন কাজে ব্যর্থ হতেই পারে। তখন তাদেরকে ভয় পেতে দেয়া যাবে না। বোঝাতে হবে এরপর সব ঠিক হবে। কারন ভুল করলে বাচ্চাদের ভবিষ্যতে সঙ্কট মোকাবেলার ক্ষমতা বাড়ে।
৬। কোনো লেবেল বা তকমা নয়ঃ
কোনো লেবেল বা তকমা সেটে দিলে আপনার বাচ্চা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। এতে তার ভবিষ্যৎ খারাপ হতে পারে।
৭। শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগঃ
জিনিয়াস বাচ্চারা নতুন নতুন কিছু করতে বা শিখতে পছন্দ করে। আর তাদের চলতি শিক্ষা ব্যবস্থার মাঝে তাদের সেই বিশেষ চাহিদা পূরণে বাবা-মাকে শিক্ষকদের সাথে নিয়মিত পরামর্শ করতে হবে।
৮। শিশুর সক্ষমতা যাচাইঃ
আপনার শিশুকে চাপ দেওয়ার আগে শিশুর সক্ষমতা যাচাই করুন। তাহলেই আপনার শিশুর মানসিক বিকাশে কোন ব্যাঘাত ঘটবে না।
কিন্তু আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার বাচ্চা প্রতিভাধর? কিছু ইঙ্গিত জেনে নিনঃ
১। আপনার শিশুর মনে রাখার অস্বাভাবিক ক্ষমতা থাকবে।
২। শিশু খুব অল্প বয়সে পড়তে শেখা।
৩। অস্বাভাবিক কিছু আগ্রহ, শখ অথবা বিশেষ কিছু বিষয়ে গভীর জ্ঞান।
৪। বিশ্বের চলমান ঘটনাবলী সম্পর্কে ধারণা
৫। শিশু সবসময় প্রশ্ন করবে।
৬। তার উচ্চমানের রসিকতা বোধের ক্ষমতা থাকবে।
৭। সঙ্গীত নিয়ে আগ্রহ।
৮। নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগ্রহ।
৯। খেলার সময় নতুন এবং অতিরিক্ত নিয়মকানুন তৈরির ক্ষমতা।