বাচ্চাদের দৈহিক এবং মানসিক বিকাশ ঘটাবে যেসব খাবার। | 20fours
logo
আপডেট : ৩০ অক্টোবর, ২০১৮ ২৩:১৬
বাচ্চাদের দৈহিক এবং মানসিক বিকাশ
বাচ্চাদের দৈহিক এবং মানসিক বিকাশ ঘটাবে যেসব খাবার।
20fours Desk

বাচ্চাদের দৈহিক এবং মানসিক বিকাশ ঘটাবে যেসব খাবার।

বলা হয়ে থাকে আজকের শিশু আগামি দিনের ভবিষ্যত। আর তাদের আগামি দিনের ভবিষ্যত হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন ছোট থেকে তাদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করা। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে খাবার। খাবার সব শিশুদের খাওয়ান হয়। তবে এক্ষেত্রে আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে, সঠিক বয়েসে সঠিক খাবার। কারন খাবারের মাধ্যমেই একটি শিশুর দৈহিক এবং মানসিক বিকাশ হবে। তাই আপনার ছোট্ট সোনামণিকে একদম ছোট থেকেই এমন সব খাবার খাওয়ানো উচিতে যা তার সঠিক বিকাশে সহায়তা করবে। আসুন তবে আজ জেনে নিই এমনই কিছু পুষ্টিকর খাবার সম্পর্কে যা ছোট থেকে বাচ্চাদের খাওয়ানো উচিত। বাচ্চাদের বিকাশে যা যা খাওয়াবেনঃ

১। লাল আঙ্গুরঃ
শিশুদের জন্য লাল আঙ্গুর খুবই ভালো এবং উপকারী একটি খাবার। আর এর স্বাদ হালকা টক মিষ্টি হওয়ায় শিশুরা এটি খেতেও অনেক পছন্দ করে। লাল আঙ্গুরে আছে এন্থসায়ানীন ফ্লেভনইড নামের একটি উপাদান। যা শিশুদের জন্য ভীষণ উপকারী। বিশেষ করে শিশুদের চোখের জন্য এটি অনেক ভালো। এছাড়াও শিশুদের ব্রেইন ডেভলমেন্টে লাল আঙ্গুর অনেক উপকারী। পটাসিয়ামের খুব ভালো একটি উৎস হলো লাল আঙুর। এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটেনয়েড এবং পলিফেনল। এই উপাদানগুলি হলো এক ধরণের ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট। যা ছোট থেকেই শিশুদের ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আঙুরের আছে রেসভেরাট্রল, যা বাচ্চাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। তাই রোজ আপানার ছোট্ট সোনামণিকে লাল আঙ্গুর খাওয়াতে একদমই ভুলবেন না।

২। দইঃ
আপানার ছোট্ট সোনামণির জন্য দই হতে পারে একটি খুবই মজাদার খাবার। যখন থেকেই আপনার বাচ্চা নতুন খাবার খেতে শুরু করবে তখন থেকেই তাকে দই খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। দই শিশুদের জন্য মারাত্বক উপকারী একটি খাবার। এটি বাচ্চাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শিশুর নরম হাড়কে শক্ত ও মজবুত করে টলে। একই সাথে দই শিশুর পেশি গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। একই সাথে ব্রেইন ডেভলমেন্ট এবং হার্ট ভালো রাখে ও হার্টের পেশী গঠনে সাহায্য করে। প্রতিদিন ২ চামচ দই খেলে শিশুর দাঁত ভালো থাকে এবং খাদ্য নালীতে উপকারী অণুজীব সৃষ্টি করে যা খাদ্য হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও দই বাচ্চাদের শরীরে পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং আয়োডিনের ঘাটতি দূর করে। একই সাথে  ভিটামিন বি৫ এবং বি১২-এর মাত্রা বাড়তে থাকে। ভিটামিন বি১২ বাচ্চাদের রক্তে লোহিত  কণিকার উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের নার্ভাস সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বাচ্চার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিদিন অন্তত দুই চামচ দই খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৩। ডালঃ
আপনার ছোট্ট সোনামণি যখন থেকেই ভাত শুরু করবে তখন থেকে তাকে ডাল খাওয়াবেন।ডাল হলো আমিষ এবং আঁশে পূর্ণ একটি খাবার। ডালে থাকা আমিষ, আঁশ, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাসের মত উপকারী সব উপাদান শিশুদের দেহ গঠনে অনেক সাহায্য করে। শিশুদের শরীরের হাড় গঠনে এবং হাড়কে মজবুত করতে এসব খনিজ উপাদানের কোনো বিকল্প নেই। ক্যালসিয়াম শিশুদের দাঁত ভালো রাখে এবং একই সাথে তাদের দাঁত শক্ত করে। এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ব্যাক্টরিয়্যাল প্রপার্টিজ, যা শিশুদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। একই সাথে এতে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন শিশুদের স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। ডালকে বলা হয় একটি ফুল প্যাক পুষ্টিকর খাবার। তাই ছোট শিশুদের শরীর গঠনে ডালের উপকারীতা অনেক।

৪। ব্রকলিঃ
ব্রকলি একটি বিদেশি সবজি হলেও বর্তমানে আমাদের দেশে ব্যাপক ভাবে চাষ হয়। মোটামুটি সারাবছর এবং সবখানে এই সবজিটি কিনতে পাওয়া যায়। শিশুদের সঠিক বিকাশের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে আছে ফলেট, ক্যালসিয়াম এবং সালফার কম্পাউন্ড। যা শিশুদের দৈহিক এবং মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। এর চমৎকার ফ্লেভার বাচ্চার স্বাদে পরিবর্তন নিয়ে আসে।ব্ রকলি ছোট থেকেই বাচ্চাদের ক্যান্সার প্রতিরোধ সক্ষম প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। একই সাথে এতে থাকা ভিটামিন সি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এজন্য ব্রকলিকে ছোট ছোট টুকরো করে সিদ্ধ করে একদম নরম এবং হালকা দানাদার করে খাওয়াতে হবে।

৫। মাংসঃ
শিশুদের দৈহিক গঠনের জন্য মাংস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এজন্য ছোট থেকে শিশুদের লাল মাংস(বিফ কিংবা মাটন) অথবা সাদা মাংস(মুরগি) খাওয়াতে হবে। এটি আমিষের পাশাপাশি জিঙ্ক এবং আয়রন এর ভালো উৎস।ফলে শিশুদের হাড় শক্তিশালী হবে এবং তাদের দ্রুত বাড়ন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে মাংস খেলে শিশুদের ব্রেইন ফাংশানের উন্নতি হবে এবং পেশী গুলো শক্ত হবে। মাংসে থাকা আঁশ শিশুদের কন্সটিপেশন সারাতে সাহায্য করে। আবার মাংস রান্নার সময় যদি এতে একটু আদা এবং সবজি মেশালে এর পুষ্টিমান আরও অনেক বেরে যাবে।