ত্বকের যত্নে মইয়েশ্চারাইজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের আদ্রতা ধরে রেখে ত্বককে নরম এবং সুন্দর করে তলে ময়েশ্চারাইজার। একই সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও এর বেশ ভূমিকা রয়েছে। আর এই ময়েশ্চারাইজারের জন্য আমরা ব্যবহার করে থাকি নানারকম ক্রিম কিংবা লোশন। যেগুলোর বেশিরভাগই নানারকম রাসায়ানিক উপাদান দিয়ে।ফলে সব ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বকের উপকারের পাশাপাশি ক্ষতিও কিন্তু কম হয় না। তাই আমাদের উচিত এসব রাসায়ানিক মিশ্রিত ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে সবসময় প্রাকৃতিক উপাদান আছে এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে। কিন্তু এমন ময়েশ্চারাইজা আমরা কোথায় পাব? আসলে আমাদের হাতের কাছেই লুকিয়ে আছে এমন কিছু তেল যেগুলো প্রকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে চমৎকার কাজ করে। আসুন তবে আজ জেনে নিই এমন কিছু তেল সম্পর্কে যা প্রকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে আমরা আনায়াসে ব্যবহার করতে পারি।
১. কালিজিরার তেল
কালোজিরা বা কালিজিরা যে নামেই ডাকুন না কেন এর উপকারীতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। সেই প্রাচীনকাল থেকে শরীরের বিভিন্ন চিকিৎসায় কালোজিরার ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আর এই কালোজরা থেকে পাওয়া কালোজিরার তেলও অনেক উপকারী, বিশেষ করে সৌন্দর্যচর্চাতেও এটি ভীষণ রকম কার্যকরী।এটি খুবই ভালো একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটি নিয়মিত ত্বকে ম্যাসাজ করলে আমাদের ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসে।নানারকম উপকারী সব উপাদানের পাশাপাশি কালোজিরার তেলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন বি২ ও ভিটামিন সি, যা ত্বকে সঠিক পুষ্টির যোগান দেয় এবং আমাদের যৌবন ধরে রাখে। এই তেল ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বক হয় উঠে উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময়।
২. আমন্ড অয়েল
ভিটামিন এ, বি এবং ই-এর অন্যতম একটি উৎস হলো আমন্ড অয়েল। রূপচর্চায় আমন্ড অয়েলের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই। এতে থাকা অনেক উপকারী উপাদান আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।এতে থাকা সবগুলো ভিটামিনই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ত্বকের কোষ পুনরায় গঠন করতে সাহায্য করে এবং বলিরেখাসহ বয়সের বিভিন্ন ছাপ যেমন ছোপদাগ, রঙের অসামঞ্জস্য ইত্যাদি দূর করে এবং ত্বকে উজ্জ্বল আভা নিয়ে আসে।এটি আমাদের ত্বকে বয়েসের ছাপ কমায় এবং ত্বককে করে তোলে অনেক কোমল।তাই ময়েশ্চারাইজার হিসেবে এই তেলের জুড়ি নেই।
৩. অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল খুবই উন্নত মানের ময়েশ্চারাইজার। রুপচর্চায় অলিভ অয়েলের ব্যবহার বহু পুরানো। সেই প্রাচীন কাল থেকে ত্বকের এবং স্বাস্থ্য রক্ষায় অলিভ অয়েলে ব্যবহার হয়ে আসছে। অলিভ অয়েলের গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। নিয়মিত এটি ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকে বয়সের ছাপ কমিয়ে থাকে। এছাড়াও ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখার জন্য অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। অলিভ অয়েল সব ধরনের ত্বকের জন্য সমান উপকারী। এটি ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগান দেয়। ত্বকের লাবণ্যতা ধরে রাখার জন্য অলিভ অয়েল খুবই উপকারী।
৪. তিলের তেল
আপনি যদি হঠাৎ করে লক্ষ্য করেন যে আপনার ত্বকে অসময়ে বলিরেখা পড়ছে কিংবা অসময়ে ত্বকের চামড়া কুচকিয়ে যাচ্ছে তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে উপকারী হলো তিলের তেল। এটি ত্বকের চামোড়াকে টানটান রাখে এবং ত্বকের বয়স বাড়তে দেয় না। তিলের তেল প্রাকৃতিক ভাবেই ত্বকের মৃত কোষ দূর করে দেবে এবং ত্বকে যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করবে ও ত্বক হয়ে উঠবে সজীব। রোদে পোড়া দাগ দূর করতেও তিলের তেলের জুড়ি নেই। তিলের তেলের মাসাজ ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়াবে এবং ত্বক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলবে। এজন্য প্রতিদিন গোসলের আগে তিলের তেল দিয়ে ত্বক মাসাজ করুন ও তারপর ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তিলের তেল খুবই ভালো একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার।
৫। নারকেল তেলঃ
চুলের যত্নে নারকেলে তেলের কথা আমরা সবাই জানি। চুলের পাশাপাশি আমাদের ত্বকের যত্নেও এটি সমান উপকারী। এটি খুবই ভালো একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটি আমাদের ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বককে কোমল করে তোলে।বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি ভীষণ উপকারী। নারকেল তেল ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং ত্বকের দাগ দূর করে। একই সাথে এই তেল বলিরেখা কমায় এবং ত্বকে বয়েসের ছাপ পড়তে দেয় না। এজন্য দিনে অন্তত একবার নারকেল তেল দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করা উচিত।