পেশিতে টান পড়লে করণীয়
রাতে ঘুমের মাঝে, ব্যায়ামের সময় কিংবা খেলতে গিয়ে অনেকেরই হঠাৎ মাসলপুল হয়। অর্থাৎ মাংসপেশিতে টান পড়ে। কখনো কখনো ভারী কিছু তুলতে গিয়েও অনেকের এমন অভিজ্ঞতা হয়। মূলত অতিরিক্ত চাপের কারণে মাংসপেশির সূক্ষ্ম তন্তুগুলো ছিঁড়ে যায়। যার ফলে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। এমনকি কেবল হাঁটতে গিয়ে বা ঘুমের ঘোরে এপাশ-ওপাশ করতে গিয়েও হঠাৎ করে মাংসপেশিতে টান লাগতে পারে। ঘটনাটি সামান্য হলেও এর জন্য কিন্তু অনেককেই বেশ ভুগতে দেখা যায়। আজকের লেখায় তাই জানবো পেশিতে টান পড়লে আমাদের করণীয় কিছু টিপস।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক পেশিতে টান পড়লে আমাদের করণীয় কিছু টিপসঃ
(১) পেশিতে টান পড়লে কিংবা কোথাও মচকে গেলে দুনিয়াব্যাপী “RICE থেরাপি” প্রয়োগ করা হয়। “RICE থেরাপি” মানে হচ্ছে, R- Rest, I- Ice, C- Compression, E- Elevation। অর্থাৎ প্রথমেই আক্রান্ত পেশির পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। তারপর সেখানে ঠাণ্ডা বরফ দিয়ে সেঁক দিতে হবে। বরফ না পেলে ঠাণ্ডা পানিতেও কাজ চলবে। এরপর আক্রান্ত পেশিতে চাপ প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য বাজারে ক্রেপ ব্যান্ডেজ নামে এক ধরনের ব্যান্ডেজ পাওয়া যায়। এটা বেশ কার্যকর। সবশেষে আক্রান্ত স্থানের নিচে বালিশ বা অন্য কিছু দিয়ে শরীরের তুলনায় কিছুটা উপরে রাখতে হবে। বিশেষ করে শোয়ার সময় এভাবে আক্রান্ত স্থানের নিচে কিছু দিয়ে শুতে হবে। এই থেরাপি প্রয়োগে বেশ আরাম পাওয়া যায় ও ব্যথাও কিছুটা উপশম হয়।
(২) মাসলপুলের পর তিন দিন পার হয়ে গেলে টান লাগা পেশিতে সামান্য করে কুসুম গরম পানির সেঁক দেয়া যায়। এতে করে ওই স্থানের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে। ফলে আক্রান্ত পেশি দ্রুত সেরে উঠবে।এছাড়াও ব্যথার জন্য সাধারণত প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেলেই উপকার পাওয়া যায়।
(৩) তবে ব্যথা খুব বেশি ও তীব্র হলে ন্যাপ্রক্সেন বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় পেইনকিলার ওষুধ হিসাবে খাওয়া যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে এসব ওষুধ অবশ্যই ভরা পেটে খেতে হবে। খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে ওমিপ্রাজল বা রেনিটিডিন জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে হবে। তা না হলে এসিডিটির সমস্যা হতে পারে। খুব বেশি ব্যথা অনুভূত না হলে ছাড়া পেইনকিলার খাওয়া ঠিক নয়। কেননা এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে।
এছাড়াও আক্রান্ত স্থানকে সচল রাখতে হবে। এজন্য মাঝে মাঝে অল্প অল্প করে নাড়াচাড়া করার চেষ্টা করতে হবে। তবে খুব বেশি প্রেসার দেয়া যাবে না।তবে আঘাতজনিত কারনে মাসলপুল হলে এবং আঘাতের সময় যদি “মট” করে কোন শব্দ হয় এবং ৭ দিনের বেশি ব্যাথা থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।